বেলঘরিয়া মহাকালী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এক গৌরবময় ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী। মহারানী বিদ্রোহী তপস্বিনী মাতাজি গঙ্গাবাই প্রতিষ্টিত আদি মহাকালী পাঠশালার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বেলঘড়িয়ার কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব ১৯১০ সালের ২রা জানুয়ারি মহানুভব কেদারনাথ দাস ঘোষ মহাশয়ের বাড়িতে বেলঘরিয়া মহাকালী পাঠশালার প্রতিষ্ঠা করেন। কেদার নাথ দাস ঘোষ মহাশয় এর স্ত্রী কলকাতার আদি মহাকালী পাঠশালার ছাত্রী ছিলেন এবং এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তার অবদানও কম নয়।
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৭বছর পর এই বিদ্যালয়ের নামে ৮ শতক জমি ক্রয় করা হয়। ওই জমিতে বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন নির্মাণ করে ১৯১৯ সালের জুন মাসে বিদ্যালয় নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত হয়। বর্তমানে উক্ত ভবনটি বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা স্বর্গীয়া গায়ত্রী সেনগুপ্তর নামে উৎসর্গ করা হয়েছে এবং পুরাতন এই ভবনটি গায়ত্রী ভবন নামে পরিচিত।১৯২১ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মি. ম্যাডাম এই বিদ্যালয়কে মাসিক ৩০ টাকা হারে সাহায্য করতেন। ১৯৪৫ সালে বিদ্যালয়টি চতুর্থ শ্রেণি থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীতে উন্নীত হয়। ১৯৫২সালে বিদ্যালয়টি উচ্চ বিদ্যালয় হিসাবে সরকারি অনুমোদন লাভ করে। বিদ্যালয়টি ১৯৬১সালে একাদশ শ্রেণিতে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং ১৯৭৬ সালে দ্বাদশ শ্রেণীতে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে আঠারোটি ঐচ্ছিক বিষয় পড়ানো হয়।সামগ্রিক এই উন্নয়নে স্থানীয় প্রগতিশীল শিক্ষানুরাগীদের সক্রিয় সহযোগিতা অবশ্যই স্মরণীয়।
১৯৭৭-৭৮ সালে মূল ভবনের অনতিদূরে ২৬ কাঠা জমি ক্রয় করে ১৯৮০সালে নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। এই নতুন ভবনের উদ্বোধন হয়েছিল ১৯৮৩ সালের ৩রা এপ্রিল। নতুন ভবনের নামকরণ হয়েছে উত্তরা ভবন।
প্রয়োজনের তাগিদে দুটি ভবনেরই সম্প্রসারণ ও সংস্কার চলছে প্রতিনিয়ত। বিদ্যালয়ের ছাত্রী - অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষা কর্মী, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব এবং পরিচালন সমিতির অকৃপণ সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের ক্রমবর্ধমান উন্নতির ধারা অব্যাহত রয়েছে।