বসিরহাট শহরের কোল ঘেঁষে বয়ে চলা ইছামতীর খুব কাছেই অবস্থিত বসিরহাট হাই স্কুলটি দীর্ঘ ১৪৩ বছর ধরে মানুষ গড়ার কাজটি গর্বের সাথে পালন করে চলেছে।শুধু সুশিক্ষা নয়, নৈতিকতার শিক্ষা দিয়ে যথাযথ মানুষ গড়ার পথ নির্দেশ করে চলেছে গর্বের স্কুল টি।
শিক্ষার তপোবন সম স্কুলটি তার স্বীয় বৈশিষ্ট্য বসিরহাটবাসীর মনোজগতে এক অনন্য শ্রদ্ধার আসন তৈরি করে নিয়েছে। ছাত্র ছাত্রীরা এর সাফল্যের বিজয় পতাকা দেশের সীমা অতিক্রম করে বহির্বিশ্বে উড়িয়ে চলেছে। প্রতি বছর দ্বি সহস্রাধিক জ্ঞান প্রত্যাশী ছাত্র ছাত্রীর পঠন পাঠন চরিত্র গঠন এবং সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ কামনায় নিযুক্ত রয়েছে অসংখ্য শিক্ষক- শিক্ষিকা, পার্শ্ব শিক্ষক -শিক্ষিকা ও দক্ষ অশিক্ষক কর্মচারীগণ।এই শিক্ষক -শিক্ষিকাদের স্নেহছায়ায় শিক্ষার্থীরা পূর্ণ করে চলছে তাদের জ্ঞান ভান্ডার।
শতাব্দী প্রাচীন স্কুলটি বহুমুখী গুণের অধিকারী। সর্বকালের শ্রেষ্ঠত্বের দাবি রাখে স্কুলের ল্যাবরেটরিটি।নতুন রূপে, নতুন ভাবে,নতুন আঙ্গিকে ছাত্র ছাত্রীদের জানার পরিধিকে বাড়িয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে জীববিদ্যার মিউজিয়ামটি উচ্চতর প্রশংসার দাবী রাখে।বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী, উদ্ভিদ, জীবাশ্ম ও আকরিকের এক বিচিত্র সংগ্রহ নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে মিউজিয়ামটি।
বিদ্যালয়ের গৌরব বৃদ্ধিতে সূচনালগ্ন থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে N.C.C বিভাগ। প্রায় প্রতিবছর বিদ্যালয়ের কোন না কোন ছাত্র প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির লালকেল্লায় কুচকাওয়াজে যোগদানের মাধ্যমে বিরল কৃতিত্ব অর্জন করে চলেছে। এছাড়া উপযুক্ত শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয় Boys Scout এবং Eco-Club গঠন করা হয়েছে। এই ইউনিটগুলি বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে বিশেষ সহায়ক।
শহর থেকে মহকুমা হয়ে সমগ্র জেলায় ক্রীড়ামহলে বসিরহাট হাই স্কুল একটা পরিচিত নাম ।স্কুল পর্যায় তো বটেই জেলা,রাজ্য ও জাতীয় স্তরেও এই বিদ্যালয়ের ছাত্রেরা উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতি লাভ করেছে বিভিন্ন সময়ে।বিদ্যালয় ভিত্তিক ফুটবল প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সারা পশ্চিমবঙ্গের স্কুল গুলির মধ্যে আয়োজিত গোষ্টপাল ফুটবল প্রতিযোগিতায় ১৯৮৮ সালে বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হয়।স্কুল থেকে বেরিয়েছে অসংখ্য কৃতি জাতীয় মানের ফুটবলার--মিহির বসু,দীপেন্দু বিশ্বাস, শ্রী নির্মল ঘোষ,শ্রীসুধীর দাস,শ্রী তপন ঘোষ, শ্রী অলোক দাস প্রমুখেরা।
স্কুলের সবচেয়ে গর্বের বিষয় এর পরিবেশটি।ছাত্র শিক্ষকের মধ্যেকার সম্পর্কটি।প্রতি বছরে দুবার ছাত্র শিক্ষকের মধ্যে আয়োজিত প্রীতিমূলক ম্যাচ এক সৌহার্দ্য আবহাওয়ার জন্ম দেয়।সম্প্রতি স্কুলে তৈরি হয়েছে মাল্টিজিম যা শরীর চর্চার বিশেষ ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে।
আমাদের লক্ষ্য বসিরহাট হাই স্কুলকে একটি আদর্শ বিদ্যালয় করে গড়ে তোলা।শুধু মাত্র নম্বর বা মার্কশীটে ফল ভালো করা নয়,বরং সুস্থ, বিনয়ী,চরিত্রবান,ও জ্ঞানবান ছাত্র তৈরি করা,যারা একটা আদর্শ সমাজ গঠন করে একদিন জাতির মুখোজ্জ্বল করবে।